রিফিউজি ক্যাম্প থেকে বিশ্বকাপ ফাইনাল, রূপকথার উড়ানে মদ্রিচ
1 min read১৯৯১ তে ক্রোয়েশিয়ার জন্ম। আর ১৯৯৮ তে বিশ্বকাপ ফুটবলে ক্রোয়েশিয়ার আবির্ভাব। প্রথমবার বিশ্বকাপে নেমেই সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছেছিল ক্রোয়েশিয়া। এটুকু বললেই বোধ হয় ক্রোয়েশিয়ার ফুটবল ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়!
এই প্রথমবার তারা বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলবে। লুকা মদ্রিচের নেতৃত্বে। ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলপ্রেমীরা বলছেন, সঠিক হাতে রয়েছে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার ভার। মদ্রিচের থেকে ভাল কোনও নেতা পেত না তাদের দেশ। হালফিলে বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডারদের মধ্যে ধরা হয় মদ্রিচকে। তবে তাঁর এই স্বপ্নের উত্থানের পিছনের গল্পটা শুনলে চমকে যেতে হবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ক্রোয়েশিযায় একটা সময় চরম বিপর্যয় নেমে এসেছিল তাঁর পরিবারের উপর। মাত্র ছয় বছর বয়সে সামনে থেকে দাদুকে খুন হতে দেখেছিলেন মদ্রিচ। মা-বাবা কাজের জন্য দিনের বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকতেন। তাই দাদুই ছিলেন ছোট্ট মদ্রিচের সবসময়কার সঙ্গী। এর পর শহরে একটা সময় সার্বিয়ার সেনার উত্পাত বাড়তে থাকে। বোমা-গুলির শব্দ হয়ে ওঠে রোজনামচা। উত্পাত একটা সময় মাত্রা ছাড়ালে মদ্রিচের গোটা পরিবার গিয়ে আশ্রয় নেয় উদ্বাস্তু শিবিরে। চলতে থাকে জীবন সংগ্রাম। তবে এসব কিছু কখনওই মদ্রিচকে ফুটবল থেকে দূরে সরাতে পারেনি। রিফিউজি ক্যাম্প থেকে পাকা রাস্তা, গাড়ির গ্যারেজ যখন যেখানে পেরেছেন ফুটবলে লাথি মেরেছেন ক্রোয়েশিয়ার তারকা। একবার এক সাক্ষাত্কারে মদ্রিচ বলেছিলেন, ”আমার প্রথম ফুটবল খেলা শুরু হয়েছিল একটা নষ্ট হয়ে যাওয়া বল দিয়ে। তার পর ওই হাওয়া ছাড়া বলটা দিয়েই দীর্ঘদিন খেলেছি।”
পরিবারের সঙ্গে উদ্বাস্তু শিবিরে থাকার ঘটনাটা সচরাচর বলতে চান না মদ্রিচ। অতীত জীবনের অনেক ঘটনাই যেমন তিনি সাক্ষাত্কারের সময় তোলেন না। তবে এখন তাঁর দেশকে নিয়ে বিশ্ব ফুটবলে সব থেকে বেশি আলোচনা। স্বাভাবিকভাবেই সেই দলের ক্যাপ্টেন হওয়ার সুবাদে তাঁকে নিয়েও চর্চা চলছে। একটা সময় ছোটখাটো চেহারার জন্য অনেক টিটকিরি শুনতে হত মদ্রিচকে। তার উপর তিনি স্বভাবে বেশ লাজুক ছিলেন। কিন্তু সেই লাজুক, ছোট চেহারার ছেলেটাই এখন বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার। আবার দেশের অধিনায়কও।
Facebook Comments