চলতি বিপিএলে বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রথম ফিফটি মিরাজ এর
1 min readএলাম, দেখলাম, জয় করলাম– এ কথাটি আজ পুরোপুরি মানানসই বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের তরুণ অফস্পিনিং অলরাউন্ডার ও রাজশাহী কিংসের অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে উপরের দিকে ব্যাটিং করলেও, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নাম লেখানোর পর থেকে নিচের সারির ব্যাটসম্যানই হয়ে গিয়েছেন তিনি।
এশিয়া কাপ ফাইনালে সময়ের প্রয়োজনে সবাইকে চমক উপহার দিয়ে নেমেছিলেন ইনিংস সূচনা করতে। খেলেছিলেন সময়োপযোগী ৩২ রানের ইনিংস। সেই একবারই জাতীয় দলে উপরের দিকে খেলার সুযোগ মিলেছে তার। নামীদামী ও প্রসিদ্ধ ব্যাটসম্যানদের ভীড়ে আগে নামার সুযোগ না পাওয়াটাই স্বাভাবিক।
তবে মিরাজ যে ব্যাটিং পারেন, সামর্থ্য রয়েছে ভালো খেলার– সে ছাপ দেখা গিয়েছে বেশ কয়েকবার। তার ব্যাটিং দক্ষতার প্রমাণ মিললো আরো একবার। জাতীয় দলে উপরের দিকে সুযোগ না পেলেও, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ক্রিকেটে নিজ দলের হয়ে নেমেছেন তিন নম্বরে ব্যাট করতে, নেমেই করেছেন বাজিমাত।
এখনো পর্যন্ত হওয়া সাত ম্যাচে বিদেশি ব্যাটসম্যানরা ছয়টি পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেললেও বাংলাদেশিদের কেউই পারেননি ফিফটি ছুঁতে। বুধবার দিনের প্রথম ম্যাচে খুব কাছে গিয়েছিলেন তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান আফিফ হোসেন ধ্রুব। খেলেছিলেন ৪৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। পুরো ইনিংসেই ছিলেন সাবলীল। কিন্তু ক্ষণিকের ভুলে করতে পারেননি এবারের আসরে বাংলাদেশিদের প্রথম ফিফটি।
আফিফের সেই অপূর্ণ কাজটিই পূরণ করেছেন আরেক তরুণ মেহেদি মিরাজ। তার দল আগে বোলিং করে ১১৭ রানে বেঁধেছে খুলনা টাইটানসকে। রান তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই মোহাম্মদ হাফিজ ফিরে গেলে সবাইকে অবাক করে দিয়ে সৌম্য সরকারের বদলে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে যান অধিনায়ক মিরাজ।
তাইজুল ইসলামের প্রথম বলটি ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে আঘাত হানে প্যাডে, চলে যেতে পারতো স্টাম্পেও। সেই প্রথম বলের অস্বস্তি মুখোমুখি দ্বিতীয় বলেই অসাধারণ এক সুইপে চার মেরে দূর করে দেন মিরাজ। পরের বলে আরো এক বাউন্ডারি মেরে জানান দেন তিনি এসেছেন দলের তরীকে নিরাপদে লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে।
ঠিকঠিক ওপেনার মুমিনুক হককে সাথে নিয়ে নিরাপদেই দলকে নিয়ে গিয়েছেন জয়ের খুব কাছে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে দুজন মিলে যোগ করেছেন ৮৯ রান। এ জুটিতেই নিশ্চিত হয়ে যায় ১১৮ রানের লক্ষ্যটা ছুঁতে তেমন কোনো বেগ পেতে হবে না রাজশাহীকে।
দলীয় ১০০ রানের মাথায় মুমিনুল হক আউট হন ৪৪ রান করে, তখনো মিরাজ অপরাজিত ৪৮ রানে। এর খানিক পরেই পল স্টার্লিংকে স্কয়ার কাটে ২ রান নিয়ে নিজের টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটির পাশাপাশি চলতি বিপিএলে বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রথম ফিফটিও করে ফেলেন মিরাজ। ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে ৪৩ বলে ৬ চারের সঙ্গে ১ ছক্কার মারে নিজের ফিফটি পূরণ করেন তিনি।
তবে দলকে জয়ের বন্দরে ভিড়িয়ে মাঠ ছাড়া হয়নি বিপিএলের ইতিহাসের কনিষ্ঠতম অধিনায়কের। দলীয় ১০৯ রানের মাথায় বোল্ড হয়ে ফেরার আগে ৪৫ বল থেকে ৫১ রান করেছেন তিনি। মিরাজ আউট হলেও জয় পেতে সমস্যা হয়নি রাজশাহীর। ৭ বল আগেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে আসরে নিজেদের প্রথম জয়টি তুলে নিয়েছে তার দল।
Facebook Comments